এইচ এম জাকিরঃ ভোলা লালমোহনে বোমা তৈরীর কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কারখানার কারিগর বোমা মনির বয়াতি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তার সহযোগী ফিরোজ নামের আরো এক যুবক।
সোমবার (২০ নভেম্বর) রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের জনতা বাজার সংলগ্ন আজাহার মাঝির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাত আনুমানিক সাড়ে নটার দিকে হঠাৎ করে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। চারিদিক হয়ে যায় ধুয়াচ্ছন্ন। এরপর ওই বাড়ি ও আশপাশের লোকজন ছুটে এসে দেখতে পায় আজাহার মাঝির বাড়িতে তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের সহায়তায় তৈরি হওয়া বোমার কারখানায় বিস্ফোরণের মাধ্যমে তার ছোট ভাই ফিরোজসহ গুরুতর আহত হওয়া বোমা তৈরীর কারিগর মনির বয়াতি মুমূর্ষ অবস্থায় পড়ে পড়ে থাকতে দেখতে পায়।
এরপর সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। আশঙ্কাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে ভোলা সদল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। কিন্তু বোমার বিস্ফোরণের আঘাতে তাদের মুখমণ্ডল সহ শরীরের প্রায় ৪০ শতাংশ ঝলসে যাওয়ার কারণে আশঙ্কাজনক ভেবে ভোলা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকও তাদের দুজনকেই বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। এরপর বরিশাল নেয়ার পথেই ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় মনির বয়াতির মৃত্যু হয়। সাথে থাকা গুরুতর আহত ফিরোজকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে ঢাকায়।
নিহত মনির ধলীগোরনগর ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তালেব আলীর ছেলে। আহত ফিরোজ একই ইউনিয়নের বাসিন্দা অজিউল্লাহ মাঝির ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত মনির ও তার সহযোগী আহত ফিরোজ সহ একই এলাকার মানু দালাল (কালা মান্নু), জাফর মাঝি (মোটা জাফু), নসু কামাল, আবুলকালাম, শরীফ রিয়াজ, আবুল কালাম সহ কথিত ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের গডফাদার হিসেবে পরিচিত স্থানীয় আজাহার মাঝির ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। দীর্ঘদিন যাবত তিনি স্থানীয় আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুসারী হিসাবে এলাকায় চালিয়ে যাচ্ছেন তার রাম রাজত্ব। এলাকার মানুষের কাছে এরা সবাই চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত হলেও আওয়ামীলীগের রাজনীতির পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে সখ্যতার কারণে তাদের কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে পারে না। কেউ প্রতিবাদ করলেও তাদেরকে হতে হয়েছে নানানভাবে হেনস্থার শিকার।
এ ব্যাপারে লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহবুবুল আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তারা পর্যবেক্ষণ করে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত