ভোলা সরকারি বালক এবং বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কোচিং বাণিজ্য যেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি এই দুই বিদ্যালয়ের কোচিং বাণিজ্য নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এক অভিভাবক। বিষয়টি নিয়ে তিনি ভোলা জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাসের দেন।
তার দেয়া সম্পূর্ণ স্ট্যাটাস নিম্নে দেয়া হলোঃ
মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দৃষ্টি আর্কষন করছি, ভোলা সরকারি বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়েদের ভর্তি করানোর জন্য আমরা এখানে ওখানে তদবির, সুপারিশ করানোর জন্য কত দৌড়ঝাপ করি। প্রকৃত পক্ষে এই দুটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের শিক্ষা প্রদানের মান অত্যন্ত খারাপ। এখানকার পড়াশোনা নির্ভর করে প্রাইভেট ও কোচিং করানোর উপর। আপনি যদি ক্লাস টিচারদের কাছে ১ম থেকে ফাইনাল পরীক্ষার পর্যন্ত প্রাইভেট বা কোচিং করাতে পারেন তাহলে আপনার ছেলে বিদ্যালয়ের সেরা ছাত্র। আর কোচিং করাতে পারবেন না আপনার সন্তান ভালো পরীক্ষা দিয়েও ভালো রেজাল্ট করতে পারবেনা। আমার ছেলে ক্লাস থ্রিতে পরে। ভর্তির ১ম মাস কোচিং বা প্রাইভেটে না দিয়ে স্কুলে পাঠিয়ে দেখলাম স্যারদের কোন কেয়ার নেই। ভালো পরীক্ষা দিয়েও কোনভাবেই তার ভালো রেজাল্ট আসছে না। পরবর্তীতে প্রাইভেটে দিয়ে দেখি আমার ছেলের মতো ভালো ছাত্র আর নেই। বর্তমানে প্রাইভেট এবং স্কুলের খরচ মিলে প্রতিদিন ১৫০/২০০ টাকা চলে যায়। তাতে করে মাসে আমার ছেলের পিছনে দশ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়ে যায়।
গত ২/৩ মাস ধরে ছেলে বলে আব্বু আমি আর্ট ভালো করে করলেও আর্টের স্যার আমাকে মার্ক দেয় না, বলে আমি নাকি বারবার ফেল করছি। সামনে ফেল করলে আমাকে টিসি দিয়ে দিবে।
খোজ নিয়ে দেখ গেছে, আর্টের স্যার মাসে ৮ দিন প্রাইভেট পড়ায়, তাতে করে তাকে ১০০০ টাকা দিতে হলেও আমার ঘর থেকে সেই টিচারের বাসা পর্যন্ত যাতায়াত সহ মাসে আরো ৪০০০/৫০০০ টাকা খরচ হবে।
এখন প্রস্ন হলো আমরা সাধারন জনগণ স্বল্প খরচে ভালো পড়াশোনা করানোর জন্য সন্তানদের সরকারি স্কুলে ভর্তি করাই, কিন্তু শিক্ষকরা যদি প্রাইভেটের নামে সুকৌশলে আমাদের জিম্মি করে তাহলে আমরা সন্তানদের পড়াশোনা করাবো কিভাবে?
মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয় আপনি ভোলা সরকারি বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। আপনি দয়া করে এ সকল বিষয়গুলো নিয়ে একটি শক্ত অবস্থানের পাশাপাশি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন প্লিজ। আপনার কাছে আকুল আবেদন, আপনি সিদ্ধান্ত দিন আমার সন্তান কে আমি ঐ বিদ্যালয়ে পড়াবো নাকি টিসি নিয়ে চলে আসবো। আমার পক্ষে সম্ভব নয় এতো টাকা টিউশন ফি, যাতায়াত খরচ দিয়ে ওই বিদ্যালয়ে আমার ছেলেকে পড়ানো। আমার মতো শতশত অভিভাবকদেরই একই অবস্থা কিংবা আমার চেয়েও খারাপ অবস্থা অনেকের রয়েছে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত