এইচ এম জাকিরঃ ভোলায় প্রতারক চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ ১০ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের পৌর ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহাজাহান মাষ্টারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়।
পরদিন বিকেলে অর্থাৎ ২৮ জুলাই শুক্রবার ভোলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে প্রেস ব্রিফিংয়ের মধ্য দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ আসাদুজ্জামান খান।
এ সময় তিনি বলেন, দীর্ঘদিন যাবত এই চক্রটি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সুমন ক্যামিকেল কোম্পানির ঔষধ বিক্রয় প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে।
এমনই ভাবে প্রতারণার শিকার হন লালমোহন উপজেলার কয়েকজন মুদি ব্যবসায়ী। তাদের মধ্যে শাহাবুদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী ভোলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের শরণাপন্ন হন। এরপর থেকেই সাইবার ক্রাইম টিমের সদস্য এসআই শামীম সরদার ও এএসআই আল-আমীন মাসখানেক যাবত তাদের পিছনে লেগে থেকে গোপনে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের মধ্য দিয়ে এক পর্যায়ে চক্রটির কার্যকলাপের মূল রহস্য উদঘাটন করেন তারা।
অবশেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহজাহান মাস্টারের বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকা প্রতারক চক্রের ৬ সদস্যকে আটক করা হয়।
এসময় তাদের কাছে থাকা নগদ ১০ লাখ টাকা, ছয়টি মোবাইল সেট, ১৪টি সিম ও বিভিন্ন ধরনের ঔষধ সহ পাঁচটি সাদা প্লাস্টিকের বস্তায় প্রায় ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ৫০ কেজির মতো বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়।
প্রতারক চক্রের ৬ সদস্যের মধ্যে রয়েছেন, মো. জাকির হোসেন, মেহেদী হাসান, শাহাদাত মোল্লা, পারভেজ হোসেন, ইউনুস শেখ ও ওবাইদুর রহমান। তারা নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ ও ফেনি জেলার বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে যশোর, বেনাপোল সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় একাধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
পরে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিনের দায়ের করা মামলায় আটককৃত ছয় প্রতারককে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে ভোলায় সদ্য যোগদানকৃত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহিদুজ্জামান বিপিএম, বলেন, প্রতারক চক্র যতই সক্রিয় হোক না কেন, পুলিশ তার চেয়ে বেশি সক্রিয়। কেউ যদি মনে করে থাকে দিনের পর দিন প্রতারণা করে সে পার পেয়ে যাবে তা একেবারেই ভুল। দুই দিন আগে বা পরে তাকে আইনের কাছে ধরা পড়তে হবে। তাই যেকোনো ব্যক্তিই অপরাধের সাথে জড়িত হওয়ার আগেই দেশের আইন আদালতের কথা বিবেচনা করে আগেভাগেই সকল ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে তাকে পরিত্রাণ নেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত