1. info@www.skytvnews24.com : Sky TV News 24 :
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৫ অপরাহ্ন

ভোলায় ক্রমশ ধ্বসে পড়ছে সাড়ে তিনশত কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত সিসি ব্লক, নিহত ১ আহত ৫

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০২৩
  • ২৫৫ বার পড়া হয়েছে

এইচ এম জাকিরঃ ভোলায় সিসি ব্লক ধ্বসে তিন সন্তানের জননী লাইজু বেগম (৪০) নামে বাকপ্রতিবন্ধী এক নারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো পাঁচ জন। তাদের মধ্যে মুমূর্ষ অবস্থায় এক শিশুকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে সদর উপজেলা ইউনিয়নের লঞ্চঘাট সংলগ্ন ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, মাসখানেক যাবত লঞ্চঘাটের দুপাশের প্রায় ১৬০ মিটার এলাকার সিসি ব্লক মেঘনার গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এছাড়া স্বাভাবিকের চেয়ে নিচের দিকে দেবে গেছে আরো ৪০ মিটার ব্লক। একইভাবে সোমবার দুপুরের দিকে নদীতে ভাটা চলাকালীন সময়ে পানি একটু নিচের দিকে নামতেই মুহূর্তের মধ্যে লঞ্চঘাটের পাশের সিসি ব্লকের বড় একটি অংশ নদীতে ধ্বসে যায়। এ সময় সেখানে থাকা দুইটি জেলে ট্রলারের মধ্যে একটি ডুবে গেলেও আরেকটি ট্রলার দুমড়ে মুছরে পুরোপুরি ভেঙ্গে যায়। ওই মুহূর্তে ব্লকের উপর ও ট্রলারে থাকা নারী, শিশু সহ ৬ জন গুরুতর আহত হলেও ঘটনাস্থলেই লাইজু বেগম নামের একভাগ প্রতিবন্ধী নারী  নিহত হন।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা সহ ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নিহত লাইজু বেগমের মরদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি মুমূর্ষ অবস্থায় মরিয়ম (৩) নামের আরো এক শিশুকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

নিহত লাইজু সদর উপজেলা রাজাপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সিরাজের স্ত্রী। তিনি তিন সন্তানের জননী ছিলেন।

এদিকে মাসব্যাপী ইলিশা ইউনিয়নে নদীর তীর রক্ষায় প্রায় সাড়ে তিনশত কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত সিসি ব্লক ক্রমাগত ধ্বসের ঘটনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জোরালো তেমন কোন পদক্ষেপ না থাকায় বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, ভাঙ্গন ঠেকাতে স্থায়ী ভাবে কোন ধরনের পদক্ষেপ না নিয়ে নদীর মধ্যে নামমাত্র কিছু জিও ব্যাগ ফেলে দায় সারা কাজ সারছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয় বাসিন্দা নুর আলম জানান, বেশিদিন হয়নি ভাঙ্গন ঠেকাতে এ অঞ্চলে প্রায় সাড়ে ৩ শত কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনার তীরে স্থাপন করা হয়েছে সিসি ব্লক। অথচ ছয় মাস না যেতেই স্থাপিত সিসি ব্লকের বড় একটি অংশই নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি ও অপরিকল্পিত ভাবে ব্লক স্থাপন করায় এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।
তাছাড়া ব্লক স্থাপনে বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে এমনটি দাবি করে অপর বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, বহির বিশ্বে নদী তো স্বাভাবিক বিষয় বিশাল বিশাল সাগরেকে শাসন করে সাগরের কিনারে ঘরে উঠেছে বহু ধরনের পর্যটন কেন্দ্রসহ নানা স্থাপনা। আর আমাদের দেশে সামান্য মেঘনার ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেও সাধারণ মানুষ এর থেকে কোন ধরনের সুফল পাচ্ছে না।

তবে সিসি ব্লক ধ্বসে যাওয়ার বিষয়টিকে স্বাভাবিক বিষয় আখ্যা দিয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে আশা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিভিশন-১) মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ব্লক নদীতে পড়ে যাবে এটা একটি সাধারণ বিষয়। এমনকি একটু একটু করে ব্লক নদীতে পড়ে পানির নিচে স্থায়ী হয়ে দাঁড়াবে, সে ধরনের পরিকল্পনা অনুযায়ী এগুলি স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া বড় ধরনের যাতে কোন ক্ষয়ক্ষতি না হতে পারে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে ইতি মধ্যেই জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

একইভাবে ঘটনাস্থলে আসা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নিহত পরিবারকে সকল ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করার পাশাপাশি আহতদেরকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এছাড়া ওই এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে ব্লক বাঁধের উপর সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ রাখার ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মনিটরিংয়ের পাশাপাশি সর্বাত্মক নজরদারি রয়েছে এমনটি দাবি করে ভোলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিদুজ্জামান বলেন, এরই মধ্যে ইলিশিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ও ইলিশান নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। যেন ব্লকবাধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান দিয়ে কোন লোকজন চলাফেরা করতে না পারে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে ওই স্থানে পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং
error: Content is protected !!