চরফ্যাশন প্রতিনিধিঃ আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায়, এখন কাউকে গোনার সময় আছে নাকি ? এভাবেই প্রকাশ্যে হুংকার দিয়ে ভোলার চরফ্যাশনে দোকান থেকে তুলে নিয়ে সড়কে ফেলে বাবা ও ছেলেকে নির্মমভাবে মারধর করেন স্থানীয় আওয়ামী যুবলীগের তথাকথিত সন্ত্রাসীরা। এতেই ক্ষান্ত হননি তারা, বাপ ছেলেকে মারধরের এক পর্যায়ে মোটরসাইকেল যোগে তাদেরকে উঠিয়ে নিয়ে যায় নির্জন এক জায়গায়। এরপর মুক্তিপণের জন্য তাদের কাছে দাবি করেন পাঁচ লাখ টাকা। অবশেষে মুক্তিপণ বাবদ ১ লাখ টাকা ও দামী একটি মোবাইল ফোন দেওয়ার পর বাপ ছেলেকে মুক্তি দেয় তারা।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে চরফ্যাশন উপজেলার আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের শিবা চৌমুহনী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করেন।
ভূক্তভোগীরা হলেন, উপজেলার আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর শিবা গ্রামের মৃত মুজাম্মেল হক মাতাব্বরের ছেলে ইউসুফ মাতাব্বর ও ইউসুফ মাতাব্বরের ছেলে ইমতিয়াজ বাপ্পী। তারা দীর্ঘদিন যাবত বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থেকে ব্যবসায়ী ইউসুফ মাতাব্বর আবদুল্লাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ও ইমতিয়াজ বাপ্পী আবদুল্লাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আহত ব্যবসায়ী ইউসুফ মাতাব্বর ও ইমতিয়াজ বাপ্পী জানান, চরফ্যাশন উপজেলার আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের আ’লীগ নেতা যুবলীগ নেতা বেলায়েত হোসেন তোতা, আজাদ পাটওয়ারী, সাবেক ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক কামরুল ইসলাম, ছাত্রলীগ সভাপতি সিহাব খন্দকার ও সাধারন সম্পাদক নেয়ামুল সহ স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদেরকে শিবা চৌমুহনী বাজারের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইমা স্টোর এ- হার্ডওয়্যার দোকান থেকে জোর করে তুলে নিয়ে সড়কের ফেলে লোহার রড, কাঠ দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করেন। মারধরের পর সেখান থেকে হোন্ডায় তুলে বসতল্লাহ চৌমুহনী নিয়ে এক ঘন্টা আটকিয়ে রাখেন এবং ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। ওই টাকা না দিলে তাদের হাতে মাদক ধরিয়ে দিয়ে তাদেরকে পুলিশে দিবে বলে ভয় ভীতি দেখায়। পরে নগদ একলক্ষ টাকা ও একটি দামী মোবাইল ফোন দেয়ার পর বাপ ছেলে দু’জনকেই তারা মুক্তি দেয়। এমনকি বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে কোন ধরনের অভিযোগ করলে পুনরায় তাদেরকে এর চেয়ে কঠিন শাস্তির মধ্যে পড়তে হবে এমনটি হুঁশিয়ারি দেন তারা।
যদিও বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করার পাশাপাশি এই প্রতিবেদকের কথা শুনে হাসি দিয়ে পুরো বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে আব্দুল্লাপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা তোতা, আজাদ, কামরুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ সভাপতি সিহাব খন্দকার ও সাধারন সম্পাদক নেয়ামুল বলেন, তাদের অভিযোগ মিথ্যা, এ ধরনের কোন ঘটনাই এলাকায় ঘটেনি বলে জানান তারা।
চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত