বেড়িবাধের উপর বসে থাকা সেখানকার বাসিন্দা তাছলিমা, মোতাসিন, ফারুক, জাহাঙ্গির সহ আরো অনেকের সাথে কথা হলে তারা জানান, দুই দিন আগ থেকেই আমরা শুনছি বড় একটি ঝড় আসবে। যদিও এখন পর্যন্ত কোন ধরনের নমুনা না দেখা গেলেও সকাল থেকে বৃষ্টি যে শুরু হয়ে দিনভর চলছে এ বৃষ্টি। এর সাথে থেমে থেমে বাতাসের পরিমান কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও তা অনেকটাই সহনিয় অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু আকাশের যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে করে রাতের বেলায় কি হয় তা একমাত্র আল্লাহপাকই ভালো বলতে পারবেন।
তবে জেলার দক্ষিনের উপজেলা গুলো বিশেষ করে মনপুরা, চরফ্যাশন ও তজুমদ্দিন এ তিনটি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন মেঘনা এবং তেতুলিয় নদীর সংলগ্ন রয়েছে। সামান্য জোয়ারের পানিতেই তলিয়ে যায় ওই সকল উপজেলার গুলোর কয়েকটি ইউনিয়ন।
তাছাড়া মনপুরা উপজেলা পাশাপাশি ঢালচর ও কুকরীমুকরী ইউনিয়ন গুলো সাগর মোহনায় অবস্থিত হওয়ায় অল্পতেই ওই সকল অঞ্চলের বাসিন্দাদেরকে পোহাতে হয় চরম বিরম্বনায়। বর্তমানে ওই সকল অঞ্চলের অধিকাংশ বাসিন্দারা রয়েছেন চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠায়। দিনভর বৃষ্টিপাতের মধ্য দিয়ে তাদের অলস সময় কেটে গেলেও রাতে কি হয় তা নিয়েই রয়েছেন তারা চরম অতঙ্কে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ডানা’র আতঙ্কে উপকুলের বাসিন্দাদের মধ্যে কেউ কেউ আশ্রয় কেন্দ্র গুলো এসে অবস্থান নিলেও ঝড়ের জন্য প্রস্তুত রাখা অধিকাংশ আশ্রয়কেন্দ্র গুলোই রয়েছে জনমানবশুণ্য। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই সকল অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করে বলা হলেও কেউই বিষয়টি কোন ধরনের কর্ণপাতই করছেননা। এবারও হয়তো অতিতের মতো ঝড় শুরু হলেই আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য তাদের মধ্যে তৈরি হয়ে তরিগরি।
এদিকে ঘূর্নিঝড় ‘ডানা’মোকাবলোয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রয়েছে সর্বাত্মক প্রস্তুতি। বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের মিলনায়তনে জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কমিটির জরুরী বৈঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভোলা জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান। এ সময় তিনি বলেন, ঘুর্ণিঝড় ডানা মোকাবেলায় ৩ স্থরের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।
এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলায় দুর্যোগের পূর্বাভাস পাওয়া মাত্রই উপকূলে ঝুকিঁপূর্ন মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র। এছাড়াও জেলার সাত উপজেলায় ৮টি কন্ট্রোল রুম খোলার পাশাপাশি সিপিপি ও রেড ক্রিসেন্ট এর ১৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কর্মীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৯২ টি মেডিকেল টিম।
তাছাড়া দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রাথমিক ভাবে জেলায় ৫ হাজার ২০০ মেট্রিক টন চাল মুজুদ রাখা হয়েছে। জরুরী ত্রান বাবদ নগদ ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তাছাড়াও শুকনো খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত শিশু খাদ্য মজুদ রয়েছে বলে জানান তিনি।