খুলনায় সাংবাদিক জগতের তিন মহাপুরুষ আলহাজ্ব লিয়াকত আলী, হুমায়ন কবীর বালু, মানিক চন্দ্র সাহা তাঁরা সাংবাদিকতা পেশার সাথে খুলনার উন্নয়নের এবং মানুষের ন্যায্য দাবি আদায়ের কথা তুলে ধরতেন।
খুলনায় সাংবাদিকবৃন্দ সকল পেশার মানুষের কাছে ভালবাসার ও সম্মানিত কারন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করার জন্য সবার কাছে গ্রহণযোগ্য।
খুলনার সংবাদ জগতের তিন নক্ষত্র পতনের ফলে খুলনায় কর্মরত সাংবাদিক অভিভাবকহীন অার অভিভাবক ছাড়া সাংবাদিক পরিবারের মধ্য স্নেহ,ভালবাসা,সম্মান ও ভাতৃত্ববোধ কমে এসেছে অনেকে মনে করছে!
এ বিষয়ে সিনিয়র সাংবাদিক যারা আছেন চেষ্টা করছেন খুলনা সাংবাদিকতার গৌরবময় উজ্জ্বল দিন গুলো ফিরিয়ে আনতে। চেস্ঠা করছেন নানা মতের ও অনুসারী সকলকে একপ্লাটফর্মে দাঁরিয়ে কাজ করার জন্য। হয়তো গুটি কয়েক জনের মতের মিল না হওয়ায় এক কাতারে দাঁড়াতে পারছেনা। তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সাংবাদিক জগৎটাকে বাংলাদেশের বুকে সম্মানে ও আদর্শের প্রতীক হিসেবে দৃষ্টান্তে চিহ্নিত করতে।
যেমনটি করেছিলেন আমাদের পূর্বের সাংবাদিক এনে দিয়েছিলেন খুলনা সাংবাদিকদের সর্বোচ্চ সম্মানের একুশে পদকের মত রাষ্ট্রীয় পদক।
এ সম্মান খুলনার সাংবাদিকদের, বাংলাদেশ ও বাহিরের দেশে করছে খুলনার সাংবাদিকদের সম্মানিত এবং গর্বিত।
এমন ধারাবাহিকতা দেখতে চায় খুলনার সাংবাদিক সমাজ একুশে পদকের মতো রাষ্ট্রীয় সম্মান। আশায় আছেন এ অঞ্চলের সাংবাদিক বন্ধুরা।
অনেকের বিশ্বাস পূর্বের একুশে পদক প্রাপ্ত সাংবাদিকদের মত রাষ্ট্রীয় পদকের অনেকে ভূষিত হবেন তেমন সততা, প্রতিভা,যোগ্যতা ও সাহসিকতা অনেকের আছে কারণ উন্নয়ন ও সমাজের অসংগতি তুলে ধরতে ভয় ও পিছপা হয় না।
খুলনা উন্নয়নের স্বার্থে সাংবাদিকের জীবনমান উন্নয়নের জন্য সবাই এক প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে কলমের সাথে সশরীরে আন্দোলন করেন ।
খুলনার উন্নয়নের জন্য সরকারের কি করনীয় এবং উন্নয়নের জন্য কি চাই তা তুলে ধরেন। সেই সাথে তুলে ধরে সমাজের অবহেলিত মানুষের মনের কথা।
যেমনটি করেছিলেন খুলনা সাংবাদিক জগতের কালজয়ী তিন পুরুষ।
মানিক চন্দ্র সাহা
২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেসক্লাবের অদূরে ছোট মির্জাপুরে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় নিহত হন সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা। খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মানিক বিবিসি, দৈনিক সংবাদ, একুশে টেলিভিশন এবং নিউএজ পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন।
তার দুই মেয়ে বড় মেয়ে নাতাশা যুক্তরাষ্ট্রে স্নাতক পাশ করে সেখানে চাকরি করছেন। ছোট মেয়ে পর্শিয়াও যুক্তরাষ্ট্রে স্নাতক পড়ছেন।
মানিক সাহা ২০০৯ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হয়। তিনি খুলনা আপামর শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশার কথা তুলে ধরতেন। সদা হাস্য উজ্জ্বল ও মিতভাষী মানিক চন্দ্র সাহা খুলনায় সাংবাদিকদের আইডল হিসেবে অনেকের মনের মনিকোঠায় রয়েছেন।
হুমায়ুন কবীর বালু
খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক জন্মভূমি সম্পাদক হুমায়ুন কবির বালু হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি আজো, দীর্ঘ সময়ে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন না হওয়ায় নিহতের পরিবার ও সাংবাদিক সমাজে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
একুশে পদকে ভূষিত খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবীর বালু। প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়। ২০০৪ সালের ২৭ জুন।
এই দিনটি ছিল হুমায়ুন কবীর বালুর দ্বিতীয় সন্তান হুসনা মেহরুবা টুম্পা উচ মাধ্যমিক পাস করেছে, নিজ সন্তানের এই সাফল্যগাঁথার অংশীদার তিনি তার মাকে করাতে চান, তাই মাকে মিষ্টি খাওয়ানোর জন্য ইকবালনগরে যান। বালু তার সন্তানদের নিয়ে থাকতেন খুলনা মহানগরীর শান্তিধাম বাড়িতে। মাকে মিস্টি খাওয়ানোর পর বাড়িতে ফিরে তখন দুপুর ১২টার কিছু বেশি হবে। অফিস ভবনের নিচে এসে তার প্রাইভেট কারটি থামে। গেট দিয়ে বাড়ির ভেতর যখন ডুকবেন বোমাটি তখন সরাসরি অকুতোভয় সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালুর কোমরে আঘাত হানে এবং তার শরীর ক্ষতবিক্ষত হয় তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন, পতন হয় খুলনার এক নক্ষত্র।
আলহাজ্ব লিয়াকত আলী
খুলনার সংবাদপত্রে প্রথম অফসেট ও কম্পিউটার ব্যবহার করে আধুনিক প্রযুক্তি প্রচলন করেন।
এছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, রূপসা সেতু, সোলার পার্ক, শিল্পকলা একাডেমি, আধুনিক রেলস্টেশনসহ খুলনার অবকাঠামো উন্নয়ন ও দাবি আদায়ে অগ্রণী ভুমিকা রাখেন।
২০১৫ সালে শনিবার রাত ১২টার দিকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান লিয়াকত আলী।
লিয়াকত আলীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “খুলনার সাংবাদিকদের আপনজন লিয়াকত আলী সাংবাদিকতা পেশার উৎকর্ষে অবদান রাখার পাশাপাশি সমাজ উন্নয়ন ও বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজে যুক্ত ছিলেন।
“তার মৃত্যুতে খুলনাবাসী একজন প্রিয় মানুষকে হারাল। আর দেশ হারিয়েছে একজন সাংবাদিক ও সমাজসেবী।”
আমরা এই অমর সাংবাদিকদের সম্মানে খুলনায় সাংবাদিকদের মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে এবং খুলনা উন্নয়নের সর্বক্ষেত্রে এক সারিতে দাঁড়াতে পারি না?
দেশ ও দেশের বাহিরের সকলের কাছে স্মরণীয় এবং অনুকরণীয় হতে এবং খুলনাকে গৌরবময় করতে?
আরেকটি কথা না বললেই নয় হয়তো কারো নিজস্ব মত ও বিভিন্ন রাজনৈতিক মতের আদর্শে আদর্শিত হতে পারেন আর এটাই স্বাভাবিক কিন্তু সাংবাদিকতায় ভাবমূর্তি রক্ষার ক্ষেত্রে আমরা সবাই -” সাংবাদিক ” সে কারনে সবাইকে একি সুরে সুর মিলিয়ে সকলকে নিয়ে কাজ করতে হবে।
পূর্বের অনুজদের মর্যাদা ও সম্মান দিতে হবে। খুলনার সাংবাদিক সমাজ সেক্ষেত্রে মহৎ ও উদার। যার কারনে খুলনার সাংবাদিক সমাজ সকলের কাছে অকুতোভয় নির্ভীক সাংবাদিক হিসাবে পরিচিত।।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত